মোঃ মশিউর রহমান/টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধিঃ আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী ডক্টর মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেছেন, পাকিস্তানের দোসর ও তাঁবেদাররা মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও নারকীয় গণহত্যার স্মৃতি মুছে ফেলতে তৎপর রয়েছে। তিনি বলেন, যারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করে ও সুকৌশলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করে- তারা বাংলাদেশের চেতনাকে নষ্ট করতে চায়, বাংলাদেশকে হত্যা করতে চায়। মন্ত্রী বলেন, যারা পাকিস্তানের উচ্ছিষ্টভোগী, দোসর ও তাঁবেদার- যারা পাকিস্তানের ধারায় ধর্মকে ব্যবহার করে দেশ ও দেশের মানুষকে শোষণ করতে চায়, তারাই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করে। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী বাহিনী ও তাদের সহযোগীদের সংঘটিত নারকীয় হত্যাকান্ডের ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন যারা মুছে ফেলতে চায়। তারা দেশ ও জনগণের শত্রু। মন্ত্রী তাদের সম্পর্কে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান। টাঙ্গাইল জেলা সদরের বধ্যভূমি সংলগ্ন মাঠে ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্র’ নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ভিত্তিপ্রস্তর ফলক উন্মোচন করে মন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের সন্তানরা তথা আগামি প্রজন্ম ও তরুণ প্রজন্মের যারা বড় হচ্ছে- যাদের জন্য আমরা মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলাম, জীবনবাজি রেখে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিলাম- তাদেরকে এই স্মৃতিকেন্দ্র মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনাকে ধারণ করতে উদ্বুদ্ধ করবে। এই স্মৃতিকেন্দ্র মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে চিরজাগরুক রাখবে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ একটি মহাকাব্য। আর এ মহাকাব্যের মহানায়ক হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক ও বাহক। সাত কোটি মানুষকে তিনি স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করেছিলেন। সাত কোটি নিরস্ত্র বাঙালিকে সংগঠিত করে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করেছিলেন। অনুষ্ঠানে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের অবদান কতটুকু- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ইতিহাসের সত্যকে ধামাচাপা দিয়ে রাখা যায় না। আজ ইতিহাসের সত্য উৎঘাটন হয়েছে যে, জিয়াউর রহমানের অবস্থান স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসের এক ক্ষুদ্র জায়গায়। অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন টাঙ্গাইল জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আ’লীগের সভাপতি একুশে পদকপ্রাপ্ত বীরমুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান খান ফারুক। সভাপতিত্ব করেন টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ডক্টর মো. আতাউল গনি। এসময় উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনির, সংসদ সদস্য আতাউর রহমান খান, সংসদ সদস্য হাছান ইমাম খাঁন সোহেল হাজারি, সংসদ সদস্য মো. ছানোয়ার হোসেন, সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলাম টিটু, টাঙ্গাইলের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার কাজী নুসরাত এদিব লুনা, জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক মেয়র জামিলুর রহমান মিরন, টাঙ্গাইল পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র এস এম সিরাজুল হক আলমগীর ‘সহ অন্যান্য সুধীজন। পরে মন্ত্রী টাঙ্গাইল শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে স্থানীয় নাগরিক সমাজ আয়োজিত সদ্য একুশে পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান খান ফারুকের সংবর্ধনা সভায় অংশ নেন।