মির্জাপুরে ব্যাটারি গলিয়ে তৈরি হচ্ছে সীসা, হুমকিতে পরিবেশ

0

মির্জাপুর প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের লতিফপুর ইউনিয়নে পুরাতন ব্যাটারি গলিয়ে সীসা তৈরির কারখানা গড়ে উঠেছে।এই কারখানায় থেকে নির্গত রাসায়নিক পদার্থের ধোঁয়া বিষক্রিয়া ছড়াচ্ছে আশে পাশের এলাকায়। এতে হুমকির মুখে পড়ছে এ এলাকার বসবাসরত মানুষসহ গাছ-পালা, ফল ও পশু-পাখি।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়ের ত্রিমোহন এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা একাব্বর হোসেন সেতুর উত্তর-পশ্চিম পাশে গড়ে ওঠা কারখানায় স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে প্রায় ৮ থেকে ১০ জন শ্রমিক। তাদের মধ্যে কেউ পুরানো ব্যাটারির উপরের অংশ তুলে ফেলছে, আবার কেউ ব্যাটারির ভেতর থেকে সীসা জাতীয় ধাতব পদার্থ বের করছে।
শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দশ থেকে বার হাজার টাকা বেতনে কাজ করছে তারা। দিনে একদল শ্রমিক ব্যাটারি থেকে এসব ধাতব বের করে; রাতে আরেকদল শ্রমিক সেগুলো মাটির গর্তে ফেলে পুড়িয়ে একটি ঘন পাত্রের রুপ দেয়। যার প্রতিিিটর ওজন ২৫ থেকে ৩০ কেজি। প্রতিটি পুরোনো ব্যাটারি ওজন গড়ে ১২ থেকে ১৫ কেজি। এগুলো পুড়িয়ে এক একটি ব্যাটারি থেকে প্রায় ৫ থেকে ৮ কেজি সীসা পাওয়া যায়। এই সীসা বিভিন্ন বড় বড় ব্যাটারি তৈরি কারখানায় বিক্রি করা হয়।
কারখানার শ্রমিকগন এ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করার সময় কোনো মাস্ক ব্যবহার করেনা। ফলে সীসা তৈরির সময় দেহের ভেতরে অতি সহজেই রাসায়নিক পদার্থ ঢুকে প্রতিনিয়ত মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে তারা। তাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাও কারখানায়ই। জীবনের ঝুঁকি জানা স্বত্বেও এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকছে না শ্রমিকরা।
এই সীসা তৈরির কারখানার মালিক উপজেলার আজগানা ইউনিয়নের মো. রুবেল দেওয়ান জানান, আমি অল্প কিছুদিন ধরে এ কারখানা চালু করেছি, এতে কারো ক্ষতি হচ্ছে না, এক প্রশ্নের জবাবে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে কোনো ছাড়পত্র নেননি বলেও তিনি স্বীকার করেন তিনি।
এ বিষয়ে মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল মালেক জানান, এর পূর্বেও ওই কারখানায় অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা করা হয়েছে। তবে এটি যদি আবারো চালু করে থাকে তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
টাঙ্গাইল পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মোজাহিদুল ইসলাম বলেন, সিসা তৈরির কারাখানা আছে কিনা আমার জানা নেই, যদি থেকে থাকে তাহলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.