বাসাইলের দাপনাজোরে দেবে যাওয়া ব্রিজ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে মানুষ

0

বাসাইল প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার দাপনাজোর এলাকায় ঝিনাই নদীর ওপর নির্মিত ব্রিজটি পানির প্রবল স্রোতে পিলারের নীচের মাটি সরে গিয়ে প্রায় দুই মাস আগে দেবে যায়। ফলে নদীর দু’পাড়ের মানুষের যাতায়াতের অন্য কোন ব্যবস্থা না থাকায় নেহায়েত প্রয়োজনের তাগিদেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে এ এলাকার মানুষ। বন্ধ রয়েছে সকল প্রকার যান চলাচল। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকার হাজারো মানুষ। ভূক্তভোগি এসব মানুষের দুঃখ দুর্দশা দেখার যেন কেউ নেই। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষেরও নেই কোন পদক্ষেপ।

সরেজমিন পরিদর্শনকালে স্থানীয়রা জানান, দাপনাজোর এলাকার ঝিনাই নদীর ওপর নির্মিত ব্রিজটি উপজেলার আইসড়া একঢালা, দোহার, দাপনাজোর, দেউলী, জশিহাটী, হাকিমপুর, মোড়াকৈসহ ১৫ থেকে ২০ টি গ্রামের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের স্থানীয় বানিজ্যিক কেন্দ্র করটিয়া, সরকারী সা’দত বিশ্ববিদ্যালয় ও টাঙ্গাইল সদরের সাথে যোগাযোগের একমাত্র অবলম্বন এই ব্রিজটি।

১৯৯৮ সালে এলজিইডির মাধ্যমে এই ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। নির্মানকালেই নানা প্রশ্ন উঠে নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে। অতি নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রি ব্যবহার করায় নির্মাণ চলাকালেই ব্রিজটির একটি প্যান ধ্বসে পড়ে। তার পর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দায়সারা গুছে ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শেষ করে। তার উপর বালু খেকোদের অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলণ যেন মরার ওপর খারার ঘা। প্রতি বছর ব্রিজটির আশপাশে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলণের ফলে ব্রিজের নিচ থেকে মাটি সরে যায়। শুকনো মৌসুমে ব্রিজের নিচ থেকে মাটি সরার বিষয়টি চোখে পড়ে স্থানীয়দের। পরে প্রায় দুই মাস আগে ব্রিজটি দেবে যায়। সংশ্লিষ্টরা ব্রিজটি পরিদর্শন করলেও কোন পদক্ষেপ নেয়নি। ব্রিজটির দ্রুত উন্নয়ন ও সংস্কার দাবী এলাকাবাসীর। বর্তমানে ব্রিজটির অবস্থা খুবই ভয়াবহ যে কোন সময় ব্রিজটি ভেঙ্গে ঘটতে পারে বড় ধরণের দুর্ঘটনা।

স্থানীয় শফিকুল, পারভেজ, মনজু ও আলম মিয়াসহ ভূক্তভোগিরা জানান, প্রতি বছর ব্রিজের আশপাশসহ ঝিনাই নদীর বিভিন্ন স্থানে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলণের ফলে তীরবর্তী এলাকায় ভিটেবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ঈদগাহ মাঠসহ এ পর্যন্ত অর্ধশতাধিক ভিটেবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়াও ব্রিজের নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে ব্রিজটি ঝুঁকিতে রয়েছে। সম্প্রতি ব্রিজটি দেবে গেছে। এছাড়াও ব্রিজটির পূর্বপাশের অ্যাপ্রোচের মাটি সরে গেছে। ফলে ওই স্থানে স্থানীয়রা বাঁশের মাচাল বানিয়ে ব্রিজে উঠছেন।

উপজেলা প্রকৌশলী রোজদিদ আহমেদ বলেন, ইতোমধ্যে ব্রিজটি পরিদর্শন করে ব্রিজটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। যাতে কেউ ব্রিজটি ব্যবহার করতে না পারে সেজন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। সেখানে নতুন ব্রিজ নির্মাণের অনুমোদন হয়ে টেন্ডার পর্যায়ে রয়েছে বলেও তিনি জানান।

Leave A Reply

Your email address will not be published.