পৃথিবীময় বিপ্লবের স্বপ্ন দেখা মানুষটির জন্ম আজ

0

নিউজ ডেস্কঃতার নাম শুনলেই চোখে ভাসে একজন বিপ্লবীর অবয়ব। আর্জেন্টিনার এই দুঃসাহসী তরুণ চিকিৎসক কিউবা বিপ্লবের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের বড় পদ থেকে বেরিয়ে এসে পৃথিবীময় বিপ্লব ছড়িয়ে দেয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছেন মানুষকে। তার ৯১তম জন্মবার্ষিকী আজ।

১৯৬৭ সালের ৯ অক্টোবর তাকে হত্যা করা হলেও দশকের পর দশকজুড়ে চে হয়ে রয়েছেন তারুণ্যের প্রতীক। যে তরুণ স্বপ্ন দেখে, যে তরুণ সবার জন্য সমান একটি পৃথিবীকে আলিঙ্গন করতে চায়, তার সবচেয়ে বড় অবলম্বন চে গুয়েভারা।

বিপ্লবের অগ্নিপুরুষ এই গেরিলা নেতার নাম বিশ্বজুড়ে এখনো প্রতিনিয়ত ধ্বনিত হয়। তার জন্ম ১৯২৮ সালের ১৪ জুন। কিউবায় ফিদেল কাস্ত্রোর সঙ্গে সফল বিপ্লবের পর চে বলিভিয়ায় গিয়েছিলেন আরেকটি বিপ্লবের প্রত্যয় নিয়ে। বলিভিয়াতে থাকার সময় তিনি মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র মদদপুষ্ট বলিভিয়ান বাহিনীর কাছে ধরা পড়লে নির্মমভাবে তাকে হত্যা করা হয়।

চে গুয়েভারার জীবনে হাঁপানি ছিল নিত্যসঙ্গী। এই রোগের কারণে প্রথম দুই বছর স্কুলে যেতে পারেননি, পড়াশোনা করেছেন বাড়িতে বসে। সারা জীবন তিনি এই রোগ বয়ে বেড়িয়েছেন। মাত্র ১১ বছর বয়সে এক বিচিত্র কারণে কিউবার প্রতি অনুরক্ত হন তিনি।

চে গুয়েভারার পুরো নাম ‘আর্নেস্তো গেভারা দে লা সেরনা’। জন্মসূত্রে তিনি আর্জেন্টিনার নাগরিক। একবার কিউবার দাবা খেলোয়াড় কাপাব্লাংকা এসেছিলেন বুয়েন্স আয়ার্সে। চে ছিলেন দাবার দারুণ ভক্ত। কাপাব্লাংকার আগমনই তাকে কিউবা সম্পর্কে আগ্রহী করে তুলেছিল।

মাত্র চার বছর বয়স থেকেই বইয়ের সাগরে বুঁদ হয়ে থাকতে পেরেছেন চে। বাড়িতে ছিল কয়েক হাজার বই। তাই বইয়ের সঙ্গে মিতালি পাতাতে কোনো সমস্যাই হয়নি তাঁর। কবিতা পছন্দ করতেন তিনি। নিজেও লিখতেন কবিতা।

বিজ্ঞানের প্রতি দারুণ আকর্ষণ ছিল তার। বিশেষ করে গণিত ছিল তার প্রিয় বিষয়গুলোর অন্যতম। কিন্তু পড়াশোনার বিষয় হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন চিকিৎসাবিজ্ঞানকে। প্রাচীন সভ্যতার প্রতিও ছিল আকর্ষণ। সুযোগ পেলেই রেড ইন্ডিয়ান সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ দেখতে চলে যেতেন।

অবস্থাপন্ন পরিবারের ছেলে হয়েও চিকিৎসক হিসেবে সনদ পাওয়ার পর তিনি চলে গিয়েছিলেন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে, বিনা পারিশ্রমিকে চিকিৎসা করেছেন সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের। তার জীবনের সাধনা ছিল সাধারণ এসব মানুষের দুঃখ ভোলানো।

কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় তাকে নিয়ে লেখা কবিতায় বলছেন, ‘চে তোমার মৃত্যু আমাকে অপরাধী করে দেয়/ আমার ঠোঁট শুকনো হয়ে আসে, বুকের ভেতরটা ফাঁকা/ আত্মায় অবিশ্রান্ত বৃষ্টিপতনের শব্দ/ শৈশব থেকে বিষণ্ন দীর্ঘশ্বাস…/ বলিভিয়ার জঙ্গলে নীল প্যান্টালুন পরা/ তোমার ছিন্নভিন্ন শরীর/ তোমার খোলা বুকের মধ্যখান দিয়ে/ নেমে গেছে/ শুকনো রক্তের রেখা…।’

Leave A Reply

Your email address will not be published.