টাঙ্গাইল প্রতিনিধি ॥ টাঙ্গাইলে যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রীর উপর শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে সদর উপজেলার পাতুলী পাড়া এলাকায়।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে অভিযুক্ত মো: পারভেজ আলম রোকন ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে।
থানা সূত্রে জানা যায়, ১০ বছর পূর্বে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার পাতুলী পাড়া এলাকার মো: রফিকুল ইসলামের ছেলে মো: পারভেজ আলম রোকনের সাথে একই উপজেলার গালটিয়া এলাকার মো: তইজ উদ্দীনের মেয়ে জাহানারা বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে রোকন শশুর বাড়ীতে বিভিন্ন সময় অনেক আবদার করতে থাকে। এক পর্যায়ে সিএনজি কিনে দিতে স্ত্রী জাহানারা ও তার পরিবারের কাছে টাকা দাবি করে। জাহানারা ও তার পরিবারের সদস্যরা টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে রোকন রেগে যায়। পরে জাহানারাকে মারধর করে। এক পর্যায়ে জাহানারার শশুর শ্বাশুড়ি কোন প্রতিবাদ না করে উল্টো ছেলের পক্ষে কথা বলে। এবং রোকন জাহানারা ও তার পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
জাহানারার বাবা মো: তইজ উদ্দীন বলেন, আমার মেয়েকে রোকন মানসিক ও শারিরীক ভাবে অনেক নির্যাতন করে। আমরা এ নিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলরদের নিয়েও বসে ছিলাম কিন্তু কোন লাভ হয়নি। রোকন যখন সেটা চেয়েছে আমরা তা দেওয়ার চেষ্ঠা করেছি। কিন্তু দিনদিন তার চাহিদা বাড়তে থাকে। এখন আর আমাদের পক্ষে তার চাহিদা মিটানোর মত ক্ষমতা নেই। সে আমাদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে। আমরা এখন অনেক ভয়ভীতির মধ্যে বসবাস করছি। আমি চাই আমার মেয়ে যেন কোন বিপদে না পড়ে। আমি এর বিচার চাই।
অভিযোগকারী জাহানারা বলেন, আমার স্বামী দীর্ঘাদিন ধরে মাদকাসক্ত। বিয়ের পর থেকে আমার স্বামী আমার পরিবারের কাছে অনেক আবদার করে। আমার পরিবার তাদের সাধ্যমত যতটুকু সম্ভব দেওয়া চেষ্ঠা করেছে। সর্বশেষ সে একটি সিএনজি কিনে দিতে বলে। কিন্তু আমার পরিবার এতো টাকা দিতে পারবে না বলে সে আমাকে মারধর করে। আমার স্বামীর পরিবারের লোকজন এ নিয়ে কোন প্রতিবাদ করেনি। আমি তাদের কাছে কিছু বললে তারা উল্টো আমাকে বকা দিয়ে কথা বলে। তারা জানায় আমার ছেলে যেভাবে চায় তাই করতে হবে। আমার এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান আছে। আমার বড় সন্তান প্রতিবন্ধি। আমার স্বামী ঠিকমত বাড়িতেও আসে না। সে পতিতালয়ে গিয়ে পড়ে থাকে আর নেশা করে। এ নিয়ে অনেক বার বিচার শালিস ও হয়েছে। কিন্তু কোন ফল পাইনি। আমার স্বামী বাড়িতে আসলে ঝগড়া করে আমাকে মারধর করে চলে যায়। আমার স্বামী আমাকে এবং আমার পরিবারের সদস্যদের প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে আসছে। আমি এর বিচার চাই। আমি যেন দুটি সন্তান নিয়ে ভালোভাবে থাকতে পারি এমন একটা সমাধান চাই।
এ বিষয়ে মো: পারভেজ আলম রোকনের সাথে মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্ঠা করে তাকে পাওয়া যায়নি।
টাঙ্গাইল থানার উপ-পরিদর্শক খলিলুর রহমান বলেন, জাহানারাকে তার স্বামী কর্র্তৃক নির্যাতনের একটি অভিযোগ টাঙ্গাইল মডেল থানায় নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে আইনীভাবে অভিযুক্তকে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।