টাঙ্গাইলে পিবিআই কর্তৃক ৫ দিনে হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন, গ্রেপ্তার ৪

0

মোঃ মশিউর রহমান,টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ

টাঙ্গাইলে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কর্তৃক ৫ দিনে হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন ও ৪জন আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে পিবিআই এর অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, মোবাইলে প্রেম এরপর দেখা করতে গিয়ে হলেন লাশ হলেন খোদেজা। মোবাইলে কৃষ্ণ চন্দ্র দাসের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে স্কুলছাত্রী খোদেজা খাতুন। পরে তার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে বন্ধুদের সহযোগিতায় একাধিকবার ওই তরুণীকে ধর্ষণের পর গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যার পর তার লাশ ফেলে দেয়া হয় টাঙ্গাইল-তারাকান্দি সড়কের ধারে। এ হত্যার এমন বর্ণনা দিয়েছে পিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার প্রেমিক টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার ঝাউয়াইল এলাকার নগেন চন্দ্র দাসের ছেলে কৃষ্ণ চন্দ্র দাস ও তার সঙ্গীরা।
টাঙ্গাইল পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সিরাজ আমিন ৮ আগস্ট রবিবার দুপুরে তার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং করে এই তথ্য জানান। নিহত স্কুল ছাত্রী খোদেজা খাতুন গোপালপুর উপজেলার আলমনগর ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের খোকন মণ্ডলের মেয়ে। সে জয়নগর উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিল। গত ৩ আগস্ট টাঙ্গাইল-তারাকান্দি সড়কের ভূঞাপুর উপজেলার ভরুয়া এলাকা থেকে অজ্ঞাত এক তরুণীর বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ওই তরুণীর পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় ময়নাতদন্ত শেষে বেওয়ারিশ হিসেবে ভূঞাপুর ছাব্বিশা কেন্দ্রীয় কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়। পরে গত ৬ আগস্ট কৃষ্ণ চন্দ্রকে প্রধান আসামি করে ৪ জনের নামে ভূঞাপুর থানায় ধর্ষণ ও হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। এ ঘটনায় জেলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর সদস্যরা ঘটনার মূলহোতা প্রেমিক কৃষ্ণ চন্দ্র দাসসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে। পরে ঘটনার ৫ দিনের মধ্যেই আসল রহস্য বের করে। এদিকে গ্রেপ্তার ৪ জনকে আদালতে সোপর্দ করেছে পিবিআই। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, গোপালপুর উপজেলার ঝাওয়াইল এলাকার নগেন চন্দ্র দাসের ছেলে কৃষ্ণ চন্দ্র দাস, ধনবাড়ি উপজেলার বলিভদ্র এলাকার মোশারফ হোসেনের ছেলে সৌরভ আহম্মেদ, একই এলাকার গিয়াস উদ্দিনের ছেলে মেহেদী হাসান টিটু ও মৃত মজিবর রহমানের ছেলে মিজানুর রহমান। গত ৩ আগস্ট টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর-তারাকান্দি সড়কের ভরুয়া এলাকায় অজ্ঞাতনামা বস্তাবন্দী অবস্থায় এক তরুণীর লাশ উদ্ধার করে ভূঞাপুর থানা পুলিশ। পরে যুবতির পরিচয় না পেয়ে বেওয়ারিশ হিসেবে লাশ দাফন করা হয়। এ ঘটনায় পিবিআই ঘটনা স্থলে গিয়ে অনুসন্ধান চালায়। এরপর গত ৫ আগস্ট বিভিন্ন সোর্স ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে অজ্ঞাতনামা লাশের পরিচয় পাওয়া যায়। এ সময় পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ওই তরুণীর বাবা লাশের ছবি দেখে শনাক্ত করে। এর আগে গত ২ আগস্ট নানার বাড়ি থেকে ফেরার পথে নিখোঁজ হয় খোদেজা খাতুন। পরে পিবিআই টাঙ্গাইলের বিভিন্ন উৎস এবং তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনায় জড়িত ৪ জনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন। তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা স্বীকারোক্তিতে জানায়, কৃষ্ণ চন্দ্র দাসের সঙ্গে ওই তরুণীর বেশ কিছুদিন পূর্বে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরিচয় হয়। সেই সূত্র ধরেই ওই তরুণীকে ধনবাড়িতে এক বন্ধুর বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানে জোরপূর্বক একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়। ধর্ষণের এক পর্যায়ে ওই তরুণী ডাক চিৎকার করলে তার গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এ সময় ওই তরুণীর লাশ কৃষ্ণের তিন বন্ধু মিলে বস্তায় ভরে ভূঞাপুর-তারাকান্দি সড়কের ভরুয়া এলাকায় ফেলে রেখে যায়।

Leave A Reply

Your email address will not be published.