সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি:টাঙ্গাইলের সখীপুরে প্রায় এক হাজার ধান কাটা শ্রমিকের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণ করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আসমাউল হুসনা লিজা। গত ৯ মে থেকে ৪ রাত ধরে ভাসমান শ্রমিকদের রান্না করা খাবার দিচ্ছেন ইউএনও। উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়ের বারান্দা, তালতলা চত্ত্বর ও জেলখানা মোড়, মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটের বারান্দা এবং বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বারান্দায় অবস্থান করা এসব ভাসমান শ্রমিকদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসমাউল হুসনা লিজার নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তাও খাবার বিতরণ কাজে অংশ নিচ্ছেন।
জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে এখন সখীপুরে ধান কাটা শুরু হয়েছে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও রংপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, সিরাজগঞ্জ, ময়মনসিংহ ও জামালপুর জেলা থেকে কয়েক হাজার কৃষি শ্রমিক সখীপুরে ধান কাটার জন্য এসেছেন। বেশির ভাগ শ্রমিকই উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে কৃষকদের ধান কাটছেন। এদের মধ্যে ২৫০-৩০০ শ্রমিক কাজ না পেয়ে তারা উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়ের বারান্দা, তালতলা চত্ত্বর, জেলখানা মোড়, মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটের বারান্দা এবং বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বারান্দায় আশ্রয় নিয়েছেন।
উপজেলা রিসোর্স কর্মকর্তা (ইউআরসি) আব্দুস সোবাহান জানান, ইউএনও স্যারের নির্দেশে আমরা প্রতিদিন ২৫০ থেকে তিন’শ লোকের খাবার রান্না করে রাতে ভাসমান শ্রমিকদের খুঁজে খুঁজে তাঁদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম জানান, এবার এ উপজেলায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বিআর-২৮ ও বিআর-২৯ জাতের ধানই বেশি আবাদ করেছেন কৃষকরা। ধান কাটাও পুরোপুরি শুরু হয়ে গেছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) এরশাদুল আলম বলেন, গত ৪ দিনে প্রায় এক হাজার লোকের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়েছে। খাবার হোটেল বন্ধ থাকায় বহিরাগত ওইসব শ্রমিকদের অনেকেই শুধু বিস্কুট, চিড়া-মুড়ি ও পানি খেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছিল।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসমাউল হুসনা লিজা বলেন, জেলা প্রশাসক মহোদয়েরর নির্দেশনা মোতাবেক দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ধান কাটা শ্রমিক ও ভাসমান শ্রমিকদের মাঝে মাংস-খিচুড়ি, ডিম-খিচুড়ি রান্না করে বিতরণ করা হচ্ছে। নিজ হাতে অভুক্ত এসব শ্রমিকদের মাঝে খাদ্য তুলে দিতে পেরে আনন্দ পাচ্ছি। প্রতি রাতেই এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানান।
রান্না করা খাবার পেয়ে দূর-দূরান্ত থেকে আসা ধান কাটা শ্রমিকরা জানান, সখীপুর উপজেলার ইউএনও স্যারের দেওয়া খাবার তৃপ্তি নিয়ে খাচ্ছি। নিশ্চয় সৃষ্টিকর্তা একদিন এর প্রতিদান দিবেন।