নাগরপুর প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার ভাদ্রা-দপ্তিয়র সড়কের নতুন সংস্কার কৃত ৫০০ মিটার সড়ক সংস্কারের ১ মাসের মাথায় ধসে গেছে। ফলে রাস্তাটি চলাচলের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এ নিয়ে গত মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) এলাকাবাসী মানববন্ধন করলে উল্টো উপজেলা এলজিইডি অফিসের কর্মকর্তাদের তোপের মুখে পড়েন তারা। দপ্তিয়র ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নিতুজ্জামান তুনির বলেন চলতি বর্ষা মৌসুমেই ওই রাস্তাটির ৫০০মিটার অংশ ৭৪ লক্ষ টাকায় সংস্কার করা হয়। রাস্তা সংস্কারের শুরু থেকেই অনিয়ম ও দূর্ণীতি শুরু হয়। নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ও গাইড ওয়াল নির্মাণের সময় পুরাতন গাছের গুড়ি রেখেই কাজ করায় আজ রাস্তার বেহাল দশা। এ সকল বিষয় নিয়ে আমরা সে সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দিয়েও কোন সুফল পাইনি। এখন সড়কটির বিভিন্ন স্থানে ধস নেমে অধিকাংশ স্থান বিলীন হওয়ার অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় উদ্বোধনের আগেই ধসে পড়েছে রাস্তাটি। এ ছাড়া হেলে গেছে খাল পাড়ে নির্মিত গাইড ওয়াল। উপজেলা এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, গত অর্থ বছরে উপজেলার ভাদ্রা-দপ্তিয়র সড়কের ধুনাইলে বিডিআরের বাড়ি নামক স্থান থেকে রাজ্জাকের বাড়ি পর্যন্ত ৭৪ লাখ টাকা ব্যয়ে রাস্তার ৫০০ মিটার অংশ সংস্কার বরাদ্দ হয়। রাস্তার সংস্কার কাজ বাস্তবায়নের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স খান ট্রেডার্স এর কাজ পায়। রাস্তা সংস্কারের কাজ গত অর্থ বছরে শেষ করার কথা থাকলেও কাজটি শেষ হয় আগষ্টের প্রথম সপ্তাহে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এ রাস্তার নির্মাণে পর্যাপ্ত বরাদ্দ থাকলেও ঠিকাদার বেশি লাভের জন্য নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করেন, যার কারণে নির্মাণের প্রায় ১ মাসের মাথায় রাস্তায় ধস দেখা দিয়েছে। ভাদ্রা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ইমন খান রুবেল বলেন, এই রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী হাজারো মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল রাস্তার এ অংশ মেরামত করার। সরকার রাস্তার মেরামত করার জন্য বরাদ্দ দিলেও ঠিকাদার মানসম্মত সামগ্রী দিয়ে রাস্তা সংস্কারের কাজ করেনি।
তাই অল্পদিনের ব্যবধানেই রাস্তার অনেক স্থান ভেঙে গেছে। ধুনাইল গ্রামের কাউসার মিয়া বলেন, রাস্তাটি নির্মাণের সময় ঠিকাদারকে অনেকবার বলা হয়েছে ভালো মানের ইট ব্যবহার করতে, কিন্তু তারা অনেকটা বাতিল ইট ও কংক্রিট ব্যবহার করেছেন। এ ছাড়া বিটুমিনও ছিল অনেক নিম্নমানের। রাস্তার দুই পাশের পাড়গুলোও ঠিকভাবে বাঁধা হয়নি। খালের পাশ দিয়ে ওয়ালগুলো করা হয়েছে খুবই নিম্নমানের। একই গ্রামের মো.ফরিদুজ্জামান আনসারী বলেন, রাস্তার পাশে খালের সাথে গাইড ওয়াল নির্মাণে বিভিন্ন অনিয়মের কারণে গাইড ওয়ালের বিভিন্নস্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) টাঙ্গাইল জেলা শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. গোলাম আজম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঠিকাদারকে রাস্তা সংস্কার ও গাইড ওয়াল মেরামত করার নির্দেশ দিয়েছেন বলে এসও মো. মইনুল ইসলাম জানান। আগামী দুই একদিনের মধ্যেই পূণনির্মাণ কাজ শুরু হবে বলে তিনি আশ্বস্থ করেন।