স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা সমর্থন দিয়েছি। আপনারা সংস্কার করেন- আমরা সমর্থন দিয়েছি। কিন্তু এমন সময় নেবেন না যাতে মানুষ ধৈর্যহারা হয়। মানুষের ধৈর্য থাকতে থাকতে নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। রোববার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইলের সন্তোষে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী’র স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, মওলানা ভাসানী ছিলেন বেগম খালেদা জিয়ার কাছে শ্রদ্ধার এবং সম্মানের। তাকে চিনেছিলেন শহীদ জিয়াউর রহমান। তাকে চিনেছিলেন বলেই শহীদ জিয়াউর রহমান তার আদর্শ গ্রহণ করেছিলেন। আমাদের নেতা বাংলাদেশের ঘোষক শহীদ জিয়াউর রহমান কাঁদার মধ্যে হেঁটে হেঁটে কৃষকদের কাছে গিয়ে তাদের সব কথা শুনতেন। যেমন মওলানা ভাসানী শুনতেন।
তিনি বলেন, আগামির দিন হচ্ছে বিএনপির দিন। যারা এ দেশটাকে ১৬-১৭ বছর ধরে লুটেপুটে খেয়েছে আর মানুষের ওপর জুলুম করেছে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনার দিন।
শামসুজ্জামান দুদু সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে বলেন, এখন কেউ কেউ বলছেন হঠাৎ করে নাকি শেখ হাসিনা ঢুকে পড়বেন। আমরাও তো চাই আসেন, ঢুকে পড়েন। বিএনপির নেতাকর্মীরা জবাব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু ভাইকে আপনি জেলে রেখেছেন- তার কৈফিউত আপনাকে দিতে হবে।
তিনি বলেন, বিএনপি করা কি অপরাধ। আমাদের অনেক নেতাকর্মী এখনও জেলখানায়। বিএনপির যারা বাইরে আছে ৬০ লক্ষ আসামি বিএনপির। দুই থেকে আড়াই লক্ষ মামলা। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন করি। তাই আমরা অনুরোধ করবো যারা গণতন্ত্রের জন্য মামলার মুখোমুখি হয়েছে- তাদের মামলা অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার করে নেবেন।
স্মরণসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, কথিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর কদর করেনি।
কারণ আওয়ামী লীগের মধ্যে ভদ্রলোকের সংখ্যা খুবই কম- নেই বললেই চলে। বাংলাদেশের মানুষ কিন্তু আওয়ামী লীগকে ভদ্রলোক বলে না। এজন্য তারা গুণীদের কদর দিতে জানে না।
গণহত্যাকারী আজকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্যদিয়ে। তাদের আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে ক্ষমতায় আছেন অন্তর্বর্তী সরকার। মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর এ ওফাত দিবসে তারা আসেনি, শ্রদ্ধা নিবেদন করেনি- এ জন্য আপনাদের কিন্তু জনগণের কাছে মাশুল দিতে হবে।
তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ চায়। বাংলাদেশের মানুষ একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ চায়। বাংলাদেশের মানুষ তাদের পছন্দের মানুষকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় দেখতে চায়। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হলেই জনগণের জন্য কাজ করবে- জনগণের উন্নয়নের জন্য কাজ করবে। সে জন্য বলতে চাই যতদ্রুত সম্ভব অন্তর্বর্তী সরকারে যারা দায়িত্বে আছেন যত তাড়াতাড়ি মানুষের ভোটের অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার ফেরত দিয়ে একটি নির্বাচন দেবেন ততই কিন্তু ভালো হবে। আগামি দিনে তারেক রহমানের নেতৃত্বে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবো।
এসময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাস, কেন্দ্রীয় বিএনপির শিশু বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ওবায়দুল হক নাসির, জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক সভাপতি হামিদুল হক মোহন, জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীন, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরহাদ ইকবাল,মাওলানা হক ভাসানীর নাতি ও জেলা বিএনপি’র সাবেক সদস্য সচিব-মাহমুদুল হক সানু, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজগর আলী, শহর বিএনপির সভাপতি মেহেদী হাসান আলীমসহ কেন্দ্রীয় ও জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।