শরণার্থী। যাকে কেউ বলেন উদ্বাস্তু। ইংরেজিতে Refugee. একজন ব্যক্তি যিনি নিজ ভূমি ছেড়ে অন্য দেশে অস্থায়ীভাবে অবস্থান করেন।
বিশ্ব শরণার্থী দিবস আজ। প্রতি বছর জুন মাসের ২০ তারিখ বিশ্বজুড়ে শরণার্থীদের অমানবিক অবস্থানের প্রতি আন্তর্জাতিক নেতৃবৃন্দের সচেতনতা সৃষ্টির জন্য দিবসটি পালন করা হয়। এ বছর দিবসটির স্লোগান- Together we heal, learn and shine.
২০০০ সালের ৪ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০০১ সালে থেকে দিবসটি পালিত হচ্ছে। তার আগে ২০০০ সাল পর্যন্ত আফ্রিকান শরণার্থী দিবস নামে বিভিন্ন দেশে দিবসটি পালিত হয়ে আসছিল।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট বিশ্ব মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সৃষ্ট বিশাল এক মানবিক সংকট প্রত্যক্ষ করে। সহিংস হামলার শিকার হয়ে লাখ লাখ রোহিঙ্গা রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে আসে, যাদের গ্রামগুলো ধ্বংস করে দেওয়া হয়। মিয়ানমারের সেনা নির্যাতন ও গণহত্যা থেকে বাঁচতে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন। এছাড়া এর আগে থেকেই আরও প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে রয়েছেন। বর্তমানে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে নিয়ে বিরাট চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে বাংলাদেশ। নাগরিকত্ব, নিরাপত্তা, স্বাধীনভাবে চলাফেরা করার নিশ্চয়তা নিয়ে তারা আদৌ নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যেতে পারবে কি না, তা নিয়েও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রোহিঙ্গারা।
এ ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন গণমাধ্যমকে বলেন, রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করাই সরকারের উদ্দেশ্য। সেই লক্ষ্যে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ক্যাম্পে পাহাড় ধসে রোহিঙ্গাদের মৃত্যুও হয়েছে। আবার অনেকেই মানব পাচারসহ নানা ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছেন। তাদের জীবন বাঁচাতে আমরা কিছুসংখ্যক রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে সরিয়ে নিচ্ছি। রোহিঙ্গারা যতদিন এ দেশে আছে, ততদিন নিরাপদ থাকুক-এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ২০১৭ সালের ১৫ অক্টোবর দুই শতাধিক রোহিঙ্গাকে স্বদেশে ফেরত পাঠানোর দিনক্ষণ ঠিক করা হয়। তবে সেদিন রোহিঙ্গাদের অনিচ্ছায় তাদের স্বদেশে পাঠানো যায়নি। আবার কখন প্রত্যাবাসন শুরু করা হবে, তার দিনক্ষণও ঠিক হয়নি অদ্যাবধি। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দাবি করে আসছে, মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের পরিবেশ এখনো সৃষ্টি হয়নি। জাতিসংঘের সঙ্গে মিয়ানমারের চুক্তির পরও নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিয়ে শঙ্কিত রোহিঙ্গারা।