বাসাইল প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের বাসাইলে চলছে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের মহোৎসব। উপজেলা প্রশাসনের বিশেষ নজর না থাকায় বালু উত্তোলনে বেপোরায়া হয়ে উঠেছে তারা। মাঝে মধ্যে উপজেলা প্রশাসন হানা দিলেও বালু উত্তোলনকারীরা আইনের তোয়াক্কা না করে পূণরায় ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করেই যাচ্ছে। জানা গেছে, এঘটনায় ভূক্তভোগি ও সচেতন মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার বংশাই নদীর মিরিকপুরের একটি মহল্লাতেই ৭টি ড্রেজার চলছে । পাশের এলাকা ইশ্চরগঞ্জ ও নাইকানীবাড়ি পয়েন্টে চলছে বেশ কয়েকটি ড্রেজার।
এদিকে উপজেলার ঝিনাই নদীর কাঞ্চনপুরের কাজিরাপাড়া এলাকায় ড্রেজারের পাইপ উপজেলা প্রশাসন বারবার ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিলেও কোনভাবেই থামছে না বালু উত্তোলন। সাময়িকীর জন্য বন্ধ রাখলেও দু-একদিনের মধ্যেই পূণরায় আবার বালু উত্তোলন চলছে। প্রশাসন বন্ধ করলেও পূণরায় চালু হওয়ায় ভূক্তভোগিরা ব্যাপক হতাশায় ভূগছেন। বালু উত্তোলনের ফলে ওই এলাকার কাজিরাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠের একটি অংশ ও পাকা সড়ক ছাড়াও আতোয়ার আলী মাস্টার, চাঁন মিয়া, ওয়াজেদ আলী খান, আমজাদ আলী, নয়েজ খান, শাহাদত, মাহফুজ, আজাহার, হালিম, মুনছের, জুয়েল হোসেনসহ ২০ থেকে ২৫টি পরিবারের ভিটেবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এ বিষয়ে ভূক্তভোগিরা বারবার জেলা প্রশাসক, ইউএনও ও এসিল্যান্ডের কাছে লিখিত ও মৌখিকভাবে জানিয়েও কোন ফল হচ্ছে বলে জানান ভূক্তভোগিরা।
কাজিরাপাড়ার আতাহার আলী মাস্টার বলেন, ‘প্রতি বছর ড্রেজার দিয়ে লোকজন বালু উত্তোলনের কারণে আমার প্রায় ৪০ শতাংশ ভিটেবাড়ি বিলীন হয়ে কিছু জায়গা রয়েছে। এ বিষয়ে ইউএনও এবং এসিল্যান্ডের কাছে অভিযোগ দিয়েও ড্রেজার বন্ধ হচ্ছে না। এখনও ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন চলছে দেদারছে।’
আরেকজন চাঁন মিয়া বলেন, ‘ড্রেজারের মাধ্যমে আমার প্রায় ১২২ শতাংশ কৃষি জমির মধ্যে ৬০ শতাংশ জমির মাটি এলাকার কিছু চিহ্নিত লোকজন কেটে নিয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এসিল্যান্ডের কাছে অভিযোগ দিলেও ড্রেজার বন্ধ হচ্ছে না। মাঝে মধ্যে প্রশাসন এসে ড্রেজারের পাইপ ভেঙ্গে দিয়ে চলে যায়। পূণরায় তারা ড্রেজার চালু করে বালু উত্তোলন করছে।’
অপরদিকে উপজেলার মলিয়ানপুর, বার্থা, হাট বালিয়া, ময়থা, বাথুলীসাদী, তিরঞ্চসহ বিভিন্ন এলাকায় ড্রেজার চলছে দেদারছে।
বাসাইল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশরাফুন নাহার ড্রেজার চলার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ড্রেজারগুলো একাধিকবার পুড়িয়ে ও পাইপ ভেঙ্গে দিয়েছি। তারা আইনের তোয়াক্কা না করে কিছু দিনের মধ্যে আবার অবৈধ ড্রেজার চালু করছে। খুব দ্রুত এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে।’