মোঃ মশিউর রহমান /টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধিঃ
টাঙ্গাইলের একজন সফল নারী উদ্যোক্তা ও জয়িতা পদকে ভূষিত সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শামিমা আক্তার দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আদর্শ নিয়ে জীবন সংগ্রামের সফলতায় পৌছেছেন। জীবন চলার পথে শামীমা আক্তার যতবারই হোচট খেয়েছেন, ততবারই তিনি জননেত্রীর জীবন সংগ্রাম দেখে ঘুরে দাঁড়ানোর সাহস ও শক্তি খুঁজে পেয়েছেন।
দেশরত্ন শেখ হাসিনা তার কাছে একজন অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব। যে কারণে তিনি আজ টাঙ্গাইলের রাজনৈতিক অঙ্গনের বিশিষ্ট নারী রাজনীতিক, বহির্বিশ্বে বাংলাদেশী ব্র্যান্ডের পোশাকের অন্যতম বিপণন কর্মকর্তা হিসেবে ব্যাপক পনিরচিতি অর্জন করেছেন।
তিনি গাজিপুর জেলার কালিয়াকৈর এ শতভাগ রপ্তানিমুখী ক্যাপ’স ফ্যাশন লি: প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। বাংলাদেশের সকল কর্মজীবি নারীদের কাছে দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি আদর্শের নাম একটি কর্মক্ষেত্রে সংগ্রাম করে এগিয়ে যাওয়া ও সফলতার দৃষ্টান্ত।
একজন নারী প্রধানমন্ত্রী হয়েও বাংলাদেশকে রোল মডেল ও উন্নয়নে বহির্বিশ্বে পরিচিতি করেছেন। তাই জীবন চলার পথে শামিমা আক্তার যতবারই হোচট খেয়েছেন, ততবারই তিনি জননেত্রীর জীবন সংগ্রাম দেখে ঘুরে দাঁড়ানোর সাহস ও শক্তি খুঁজে পেয়ে নিজেকে সফল ও প্রতিষ্ঠিত করেছেন।নাসিরাবাদ সরকারি গার্লস কলেজে লেখাপড়া চলাকালীন সময়ে তিনি বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ছাত্রলীগে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি টাঙ্গাইল সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য। তিনি বঙ্গবন্ধু জাতীয় যুব পরিষদের একজন সম্মানিত সহ সভাপতি।
২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত টাঙ্গাইল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি বর্তমানে তৃণমূল পর্যায় থেকে শুরু করে সকল শ্রেণি পেশার মানুষের উন্নয়নে উপজেলা পরিষদ থেকে ইউনিয়ন পর্যন্ত সর্বস্তরে এই কর্মবীর মানুষটি অবকাঠামো, শিক্ষা, সমাজসেবামূলক খাতের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
বন্যা ও করোনাকালীন দুর্যোগ মুহূর্তে ইউএনও এবং চেয়ারম্যান এর সঙ্গে সরকারি তহবিল ছাড়াও ব্যক্তিগত উদ্যোগে সাহায্য সহযোগিতা করেছেন। করোনাকালীন সময়ে তিনি টাঙ্গাইল সদরের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অসহায় মানুষদের সহযোগীতার জন্য ঘুরে বেড়িয়েছেন।তিনি নিজস্ব অর্থায়নে ২০০০ পরিবারকে ত্রান বিতরন,ইউনিয়নের ঈমাম,মোয়াজ্জেম ও কিন্ডার গার্টেন স্কুলের শিক্ষকদের আর্থিক সহায়তা করেছেন। এই সব মহৎ সামাজিক কর্মকান্ডের ফলে টাঙ্গাইল সদরে একজন সাহসী করোনা যোদ্ধা হিসাবে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছেন।
কোভিড-১৯ মহামারী থেকে সুরক্ষার উপকরণ হিসেবে ব্যক্তিগত অর্থায়নে ৮,০০০ মাস্ক বিতরণ করেছেন। এছাড়াও দুর্গা পূজা উপলক্ষে পূজামন্ডপে ২,২০০ মাস্ক প্রদান করেন। শ্নেহময়ী মায়ের অকাল মৃত্যুতে তিনি মর্মাহত হয়েছেন। কিন্তু মায়ের আদর্শকে তিনি জীবনের প্রতিক্ষেত্রে অনুসরণ করে থাকেন।
যতদিন ধরণীতে বেঁচে থাকবেন, ততদিন তিনি সমাজের জন্য, দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন। এই মহান নারী উদ্যোক্তা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে সফল হওয়ায় জয়িতা পদক-২০১৯ লাভ করেছেন। আমাদের দেশের মহিলারা সাধারনত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক হয়ে থাকে হয় পারিবারিক অথবা বৈবাহিক সূত্রে কিন্তু শামিমা আক্তার একজন নারী যিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে ক্যাপ’স ফ্যাশন লি: মত একটি রপ্তানিমূখী প্রতিষ্ঠান করেছেন যা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একটি বিরল উদাহরন।তিনি সফলতার সাথে ১০ বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করছেন। এই স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানটি ইউরোপের বাজারে নিটওয়ার পণ্য যেমন- টি-শার্ট, পোলো শার্ট, সোয়েট শার্ট ও ফ্যাশনাবল পোশাক রপ্তানি করছে।
এই প্রতিষ্ঠানটি বাৎসরিক আনুমানিক ৮৪ কোটি টাকার পণ্যদ্রব্য রপ্তানি করে। জয়িতা পদকে ভূষিত সংগ্রামী নারী শামিমা আক্তার বাবা-মায়ের সঙ্গে তারা দুই বোন বাংলাদেশের খুলনা শহরে বেড়ে উঠেছেন।
তার পিতা শরিফুল বাশার, পেশায় ব্যবসায়ী এবং শ্নেহময়ী জননী মোকরেমা বেগম ছিলেন সরকারী কর্মকর্তা। বাবা-মায়ের দুই সন্তানের মধ্যে তিনি বড়। ছোট বোন রেহেনুমা জেরিন স্বামীর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার নগরীতে বসবাস করছেন। মমতাময়ী মা সরকারী কর্মকর্তা হওয়ায় বাংলাদেশী বিভিন্ন জেলায় লেখাপড়া করেছেন।
খুলনা মন্নুজান হাই স্কুল হতে ১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দে দুইটি লেটারসহ প্রথম বিভাগে এসএসসি পাস করেন। এরপর চট্রগ্রাম এর নাসিরাবাদ সরকারি গার্লস কলেজে দ্বিতীয় বিভাগে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। শেষে রাজধানী ঢাকায় স্থাপিত স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজ থেকে ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে স্নাতক (সম্মান) ও ২০০১ খ্রিস্টাব্দে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।
শামীমা আক্তার এর স্বামী তানজিলুর রহমান পেশায় একজন ব্যবসায়ী তিনি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান সোরস গ্লোবাল ডাইরেক্ট লি: এর কর্ণধর । তাদের একমাত্র পুত্র উমাঙ্গ আবরার ঢাকার স্কলাস্টিকা স্কুলে এ-লেভেল শ্রেণিতে অধ্যয়নরত।২০০৫ খ্রিস্টাব্দে শামিমা আক্তার প্রখ্যাত ব্রিটিশ সংস্থা পিএন্ডও নিডলয়েড-এ এক্সিকিউটিভ পদে যোগ দিয়ে বর্ণাঢ্য কর্মজীবন শুরু করেন। বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের সিংহভাগ আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। এই অক্লান্ত কর্মী উদ্যোক্তা নিজেকে একজন দক্ষ মার্চেন্ডাইজার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্ন লালন করতেন।
সেজন্য যুক্তরাজ্যভিত্তিক পিএন্ডও নিডলয়েড কোম্পানির সুযোগ-সুবিধা উপেক্ষা করে তিনি ২০০৭ খ্রিস্টাব্দে অপর একটি যুক্তরাজ্য ভিত্তিক কোম্পানি নরওয়েষ্ট বায়িং হাউজ-এ মার্চেন্ডাইজার পদে যোগদান করেন। তিনি কর্মক্ষেত্রে নিষ্ঠা, নিরলস পরিশ্রম ও সততার স্বীকৃতিস্বরূপ সিঙ্গাপুরভিত্তিক টেক্সিবো ইন্টান্যাশনাল প্রাইভেট লি:-এ সিনিয়র মার্চেন্ডাইজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
পেশাগত দায়িত্ব পালন কালে তিনি ফ্রান্স,জার্মানি,স্পেন, গ্রিস,নেদারল্যান্ড,ইতালি ও যুক্তরাজ্য সফর করেন। যুক্তরাষ্ট্রের পরে ইউরোপিয়ান দেশগুলো বাংলাদেশের টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানির সবচেয়ে বড় বাজার বলে বিবেচিত।