নিউজ ডেস্কঃ টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার সলিমাবাদ ইউনিয়নের ৬ ও ৭ নং ওয়ার্ডের ঘুনিপাড়া গ্রামে সরকারি চাল আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে দুই ইউপি সদস্যদের বিরুদ্ধে। ওই দুই ওয়ার্ডে সরকারের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির কার্ডের প্রকৃত মালিকরা চাল পাচ্ছে না। তবে কার্ড দিয়ে চাল তোলা হয়েছে। কার্ড মালিকদের অভিযোগ ৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ছানোয়ার হোসেন ও ৭ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মনোরঞ্জন দাস এবং ডিলার ময়নালের যোগসাজসে চাল তুলে ইউপি সদস্যরা আত্মসাৎ করেছেন। ইউপি সদস্যদের বিরুদ্ধে পাঁচশ থেকে এক হাজার টাকার বিনিময়ে কার্ড দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। তবে চাল আত্মসাদের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই দুই ইউপি সদস্য। কার্ডের প্রকৃত মালিকদের চাল দেওয়া নিশ্চিত করার জন্য উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে তদন্ত করা হচ্ছে।
সলিমাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আবু কায়ছার জানান, ইউনিয়নের নয়টি ওয়ার্ডে এক হাজার ১০৩ টি খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির কার্ড রয়েছে। ৬ নং ওয়ার্ডে ৭৪ টি ও ৭ নং ওয়ার্ডে ৯৬ টি কার্ড রয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ৬ নং ওয়ার্ডে ৭৫ টি কার্ডের মধ্যে ২৬ জন কার্ডের প্রকৃত মালিকের কাছে কার্ড নেই। আবার চারজন মৃত ব্যক্তির নামেও কার্ড রয়েছে। ৭ নং ওয়ার্ডে ৯৬ জনের মধ্যে ২১ জনের কাছে কার্ড নেই। এ ওয়ার্ডেও একজন মৃত ব্যক্তির নামে কার্ড রয়েছে। প্রত্যেক কার্ড থেকেই চাল উত্তোলন করা হয়েছে। দুই ওয়ার্ডের ১৭১ টি কার্ডের মধ্যে ৫২ জনের চাল অন্য কেউ উত্তোলন করেছে।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একাধিক কার্ডের মালিক বলেন, কার্ড দেওয়ার নাম করে ওই দুই ইউপি সদস্য পাঁচশ থেকে এক হাজার করে টাকা নিয়েছে। যে টাকা দেয়নি তার নামে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ড ইস্যু করেননি।
নিজের নামে কার্ড আছে কিন্তু চাল পাচ্ছে না নাম প্রকাশ না করা শর্তে এমন কয়েকজন বলেন, ইউপি সদস্যরা কৌশলে কার্ড গুলো নেওয়ার পর আমাদেরকে আর ফেরত দেয়নি। আমাদের কাছে কার্ড না থাকায় চালও তুলতে পারছি না। করোনাভাইরাসে মধ্যে খুব কষ্ট করে জীবন যাপন করতে হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের নামে কার্ড ইস্যু করলেও দুই ইউপি সদস্যদের কারনে তা কোন কাজেই আসছে না। ৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ছানোয়ার হোসেন ও ৭ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মনোরঞ্জন দাস এবং ডিলার ময়নালের যোগসাজসে ওই চাল তুলে ইউপি সদস্যরা আত্মসাৎ করেছেন। বর্তমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে তাদের নামের কার্ডগুলো ফেরত যান গ্রাহকরা।
৬ নং ওয়ার্ডের তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন বলেন, সুষ্ঠভাবে তদন্ত করো হয়েছে। ৬ নং ওয়ার্ডে ৭৫ টি কার্ডের মধ্যে ২৬ জন কার্ডের মালিকের কাছে কার্ড নেই। আবার চারজন মৃত্যু ব্যক্তির নামেও কার্ড রয়েছে। তবে প্রত্যেক কার্ড দিয়ে চাল উত্তোলন করা হয়েছে। কে উত্তোলন করছে সেটা ইউপি সদস্য ও ডিলার বলতে পারবে।
৭ নং ওয়ার্ডের তদন্ত কর্মকর্তা মো. খোরশেদ বলেন, ওই ওয়ার্ডে কার্ড আছে ৯৬ টি। কিন্তু ২১ জন প্রকৃত মালিকের কাছে কার্ড নেই। অন্য কেউ কার্ড দিয়ে ডিলারের যোগসাজসে চাল উত্তোলন করেছেন।
৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ছানোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের নামে সব মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। আমি কারো কার্ড নিজের নামে রাখি নাই। ডিলার আমাকে যাদের কার্ড দিয়েছে আমি তাদের কাছে কার্ড গুলো হস্তান্তর করেছি।
ইউপি সদস্য মনোরঞ্জন দাস বলেন, ৭ নং ওয়ার্ডে কতগুলো খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ড রয়েছে আমি সঠিক বলতে পারবো না। ডিলার আমাকে ৬৪টি কার্ড দিয়েছে সেই কার্ড গুলো গ্রাহকদের মাঝে বিতরণ করেছি। বাকি কার্ডগুলো চাল কিভাবে তোলা হয়েছে সেগুলো ডিলার ময়নাল ভাল বলতে পারবে।
ডিলার ময়নাল বলেন, সলিমাবাদ ইউনিয়নের নয়টি ওয়ার্ড থেকেই গ্রাহকরা আমার কাছে চাল উত্তোলন করতে আসেন। কার্ডগুলো ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানরা বিতরণ করে থাকে। ডিলারা শুধু চাল দিয়ে থাকেন। ওই দুই ওয়ার্ডের চাল আত্মসাদের বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না।
চেয়ারম্যান দাউদুল দাউদ বলেন, আমার ইউনিয়নের ইউপি সদস্যরা কোন অনিয়ম দুর্নীতি সাথে জড়িত নয়। তারা কোন চাল আত্মসাৎ করে নাই।
নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফয়েজুল ইসলাম বলেন, খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি কার্ডের উপরে কিছু ইউনিয়ন পরিষদে তদন্ত করা হচ্ছে। কেউ দোষী প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
দুর্নীতি প্রমাণের পরও স্বপদে বহাল টাঙ্গাইল পৌরসভার প্রকৌশলী আজমী
স্টাফ রিপোর্টার : দুর্নীতি প্রমাণিত হওয়ার পরও স্বপদে বহাল রয়েছে টাঙ্গাইল পৌরসভার বেড়াডোমা ব্রিজের দায়িত্বরত প্রকৌশলী শিব্বির আহম্মেদ আজমী। বুধবার(১৬ এপ্রিল) লঘুদন্ডের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সচিব মো:রেজাউল মাকসুদ জাহেদী...