ধনবাড়ী প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার কেন্দুয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজী শিক্ষক মো. ওবাইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ইংরেজি পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে কিংবা ইংরেজিতে পাশ করার লোভ দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের যৌন নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের বিচার দাবীতে গত তিনদিন যাবত অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও এলকাবাসী বিক্ষোভ করছে এবং উপ-পরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক ময়মনসিংহ আঞ্চলিক শিক্ষা অফিস, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
অভিযোগ থেকে জানা যায়- শিক্ষক ওবাইদুল ইসলাম ছাত্রদেরকে দিয়ে সমকামীতা ও ছাত্রীদের বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দিয়ে উত্ত্যক্ত করে যৌন নির্যাতন চালায়।
লিখিত অভিযোগ থেকে আরো জানা যায়, ওই শিক্ষক শিক্ষার্থীদেরকে দিয়ে জোরপূর্বক তার সাথে সকামীতায় বাধ্য করে এবং ছাত্রদের বাড়ীতে গিয়ে রাত্রি যাপন করে। এ ছাড়া বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের তার কাছে ডেকে নিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জড়িয়ে ধরে স্পর্শকাতরস্থানে হাত দিয়ে যৌন নির্যাতন চালায়। এতে করে শিক্ষার্থীরা পড়েছে চরম বেকায়দায়।
এ ঘটনা জানাজানি হলে এলকাবাসী এ ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করে বিদ্যালয় ঘেরাওসহ বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এলাকাসীর সাথে সকল শিক্ষাথীরা প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করতে থাকে। ঐসময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমান ও বিদ্যালয়ের ম্যানিজিং কমিটির সভাপতি বীরতারা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আহমদ আল ফরিদ দ্রুত শাস্তির আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে।
অভিযুক্ত ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করায় অভিযুক্ত শিক্ষক ওবাইদুল ইসলাম এলাকার জাফর আহমেদসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে টাঙ্গাইল কোর্টে একটি ৭ ধারা মামলা করে। এতে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে।
আজ মঙ্গলবার কেন্দুয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, ইংরেজি শিক্ষক ওবাইদুল ইসলামের বিরোদ্ধে যে সকল অভিযোগ শিক্ষার্থীরা করেছেন সকল অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি এলাকাবাসীর সাথে একাত্যতা প্রকাশ করে ওই অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবীও জানান। তিনি আরো জানান এ ব্যাপারে ইতো মধ্যেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপ-পরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক ময়মনসিংহ আঞ্চলিক শিক্ষা অফিস, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগটি বর্তমানে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার তদন্ত করছেন।
এ ব্যাপরে ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফা সিদ্দিকা লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মতিউর রহমান খান বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর আমি সরেজমিনে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থ্যা গ্রহণ করা হবে।
অভিযুক্ত শিক্ষক ওবাইদুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেন।