মোঃ মশিউর রহমান/টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে সুমাইয়া আক্তার (১৫) নামে এক স্কুলছাত্রী প্রেমিকাকে গলা কেটে হত্যার পর আত্মহত্যার চেষ্টা করা প্রেমিক মনির (১৭) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। ২৮ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মনিরের খালা ‘সহ সংশ্লিষ্টরা এই তথ্য নিশ্চিত করেন। তারা বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৭টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মনিরের মৃত্যু হয়। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত ২৭ অক্টোবর বুধবার সকালে কোচিংয়ে যাওয়ার পথে সুমাইয়াকে কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা পৌরসভার শামসুল হক কলেজের সামনের একটি ভবনের নিচতলায় ডেকে নিয়ে মনির তাকে গলাকেটে হত্যা করে। এরপর মনির নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করে। ওই স্কুলছাত্রীর পাশেই রক্তাক্ত অবস্থায় মনির পড়ে থাকায় বিষয়টি অন্যদিকে মোড় নেয়। দিন শেষে টাঙ্গাইলের র্যাব সদস্যরা বিষয়টির রহস্য উন্মোচন করতে সক্ষম হন। এরপর থেকে মনির হাসপাতালে র্যাব হেফাজতে চিকিৎসাধীন ছিল। অভিযুক্ত প্রেমিক বাস হেলপার মনির উপজেলার মশাজান গ্রামের মেহের আলীর ছেলে। নিহত সুমাইয়া আক্তার কালিহাতী উপজেলার পালিমা গ্রামের ফেরদৌসের মেয়ে। সে এলেঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। তারা এলেঙ্গা কলেজ মোড় এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছিল। ২৭ অক্টোবর বুধবার রাতে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে টাঙ্গাইলের র্যাব-১২ সিপিসি-৩-এর কোম্পানি কমান্ডার লে. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ‘স্কুলছাত্রী সুমাইয়ার সঙ্গে মনিরের দুই বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। গত দুই মাস আগে সুমাইয়া মনিরকে বাদ দিয়ে অন্য এক ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি মনির সহ্য করতে পারছিল না। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে মনির সুমাইয়াকে মারধর করে। কোচিংয়ে যাওয়ার সময় সুমাইয়াকে একটি ভবনের নিচতলায় ডেকে নিয়ে ছুরিকাঘাতে হত্যার পর আত্মহত্যার চেষ্টা করে মনির। নিহত স্কুলছাত্রীর পাশেই মনির আহত অবস্থায় পড়ে ছিল। বিষয়টি নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়। ঘটনাস্থল থেকে ছুরি উদ্ধার করা হয়। মনিরের দুটি ভিডিও উদ্ধার করে র্যাব সদস্যরা। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি ছিল স্পেশাল, ওটি চাপ দিলেই দুই দিক থেকে দুটি ছুরি বের হয়। ধারণা ছিল, এই ছুরির মালিকই ঘটনা ঘটিয়েছে। মনিরের আগের ভিডিওতে এই ছুরি দেখা গেছে। হত্যার আগের দিন মনির তার বন্ধুদের সঙ্গে একটি বৈঠকে বসে অস্ত্রের কথা বলেছে। সেখানে বসে মনির ড্রিংকস করেছে। ভিডিও বিশ্লেষন করে দেখা যায়, ট্রাক হেলপার মনির একটি সুইচ গিয়ার সংগ্রহ করে এবং লাইকির জন্য ভিডিও তৈরি করে। বিভিন্ন স্টাইলে মনির ঐ সুইচ গিয়ার চাকুর ব্যবহার করার ভিডিও করে, যা র্যাব-১২ টাঙ্গাইলের গোয়েন্দা টীম উদ্ধার করে। এই সুইচ গিয়ারের সূত্র ধরে, ঘটনাস্থলে একই রক্তাক্ত সুইচ গিয়ার পড়ে ছিল, যা বর্তমানে পুলিশ জব্দ করেছে। এভাবে র্যাবের ছায়া তদন্তে স্কুল ছাত্রী সুমাইয়া(১৬) হত্যার প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে ট্রাক হেলপার মাদকাসক্ত মনিরকে সনাক্ত করে। র্যাবের গোয়েন্দা তৎপরতায়, প্রযুক্তির এবং র্যাবের ছায়া তদন্তের মাধ্যমে র্যাব-১২, সিপিসি-৩, টাঙ্গাইল এর কোম্পানী কমান্ডার লেঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন এর নেতৃত্বে একটি আভিযানিক দল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে প্রধান সন্দেহভাজন আসামি মনির (১৭)কে ২৭ অক্টোবর ২০২১ তারিখ রাত ৮ ঘটিকার সময় আটক করেছিল।
টাঙ্গাইলে মাদক মামলায় স্বামী-স্ত্রীর কারাদণ্ড
স্টাফ রিপোর্টার : টাঙ্গাইলে মাদক মামলায় স্বামী উজ্জ্বল হোসেন ও তার স্ত্রী সেলিনা আক্তারকে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। উজ্জ্বল হোসেনকে সাত বছরে কারাদণ্ড এবং সেলিনা আক্তারকে পাঁচ বছরে কারাদণ্ড...