টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাতুলী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডে ধলেশ্বরী শাখা নদীর উপর নির্মিত করাইল ব্রিজটি’র সংযোগ সড়ক(অ্যাপোচ) না থাকার দূর্ভোগে স্কুলগামী শিক্ষার্থী সহ ৪ গ্রামের মানুষ। স্থানীয়রা চলাচলের জন্য সংযোগ সড়কের বিকল্প হিসেবে বাঁশের মাচাল ব্যবহার করছে।বৃষ্টি হলে মরন ফাঁদ হয়ে দাড়ায় এই মাচাল।ইতিমধ্যে বাঁশের মাচাল থেকে পড়ে বেশ কয়েক জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। বিশেষ করে বৃদ্ধ মহিলা-পুরুষ ও স্কুল পড়ুয়া ছাত্রদের জন্য এটা একটা কষ্টের কারন হয়ে দাড়িয়েছে এই সংযোগ সড়ক বিহীণ ব্রিজটি। বোঝা হয়ে আছে, স্থানীয় খারজানা, বাউসাত, চৌবাড়িয়া ও করাইল চারটি গ্রামের মানুষদের জন্য। কাতুলী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের খারজানা, বাউসাত, চৌবাড়িয়া ও করাইল গ্রামের লোকজনের তোরাপগঞ্জ ও কাতুলীর সাথে যোগাযোগের মাধ্যম হচ্ছে এই করাইল ব্রিজ। উদ্বোধনের পর দীর্ঘ ১০ মাসেও সংযোগ সড়কটি তৈরী না হওয়ায় ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে স্থানীয়দের মাঝে।
জানা গেছে, গত ২৪ জানুয়ারী টাঙ্গাইল-৫( সদর) আসনের সংসদ সংদস্য মোঃ ছানোয়ার হোসেন করাইল ফুট ব্রিজটি উদ্বোধন করেন। ৩৬ লাখ টাকা ব্যায়ে নির্মিত ৪৫ মিটার দীর্ঘ ২.২ মিটার প্রশ্তের এই ব্রিজটির অর্থায়ন করেছে উপজেলা পরিষদ টাঙ্গাইল। বাস্তবায়নকারী সংস্থা হচ্ছে,স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর(এলজিইডি) । ব্রিজটি নির্মাণ করেছে মের্সাস সোমা এন্টারপ্রাইজ।
নির্মানকারী প্রতিষ্ঠান সোমা এন্টারপ্রাইজের তত্বাবধায়ক মোঃ ফরিদ জানান,এই ব্রিজের সাথে সংযোগ সড়ক নির্মানের কোন অর্থ বরাদ্দ ছিল না । প্রথমে ব্রিজের উইং ওয়াল ইট দিয়ে তৈরি করার ডিজাইন করা হয়েছিল। পরে ডিজাইন পরিবর্তন করে আরসিসি করা হয়।বন্যার কারনে উইংওয়াল তৈরি করা সম্ভব হয়নি। উইং ওয়াল ছাড়া সংযোগ সড়কে মাটি ফেললে কোন লাভ হবে না। মাটি ধসে যাবে।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় সিকদার পাড়া মাদ্রাসার ছাত্র বাউসাত গ্রামের আতিক(১২) বলেন, আমি প্রতিদিন সাইকেল নিয়ে মাদ্রাসায় যাই। ব্রিজ পার হতে ভীষন ভয় লাগে। কখন ব্রিজ থেকে পড়ে যাই। বৃষ্টি হলে সে দিন আর মাদ্রাসায় যাওয়া হয় না।
করাইল গ্রামের নায়েব আলী ক্ষোভের সাথে বলেন, সংযোগ সড়ক না থাকাতে এই ব্রিজটি আমাদের কোন কাজেই আসছে না। বরং বিপদের কারন হয়ে দাড়িয়েছে। বৃষ্টি হলে বাঁশের মাচার ভিজে পিচ্ছিল হয়ে যায়। ইতোমধ্যে বেশ ক’জন পড়ে গিয়ে আহত হয়েছে।আর ব্রিজের দুই পাশের মূল সড়কে মাটি ভরাট না করলে, সংযোগ সড়ক করেও খুব বেশী লাভ হবে না।
খারজানা গ্রামের গৃহবধু নাছিমা আক্তার বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েদের এই ব্রিজ পার হয়ে স্কুল-মাদ্রাসায় যেতে হয়। এসে পার করে দিয়ে যাই। কখন কি হয় সব সময় এই ভয়ে থাকি। সরকারের কাছে আমাদের দাবী, যত দ্রুত সম্ভব এই সংযোগ সড়ক ও মুল সড়কটিতে মাটি ফেলে উচু করে দেয়া হোক।
কাতুলী ইউনিয়নের ৩ নং ওযার্ডের ইউপি সদস্য সাখাৎয়াত হোসেন জানান, দীর্ঘ দিন চেষ্টার পর সংযোগ সড়কটি নির্মানের জন্য কিছু চাল বরাদ্দ হয়েছে। কবে নাগাদ কাজ শুরু হবে সেটা বলতে পারছি না।আর সেতুর দুই পাশের সড়কের মাটি ফেলার বিয়য়টি চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছে। বিষয়টি সর্ম্পকে চেয়ারম্যান সাহেব অবগত আছেন।
কাতুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন মিঞা বলেন, ৩৬ লাখ টাকা ব্যায়ে নির্মিত ব্রিজটির সংযোগ সড়কের জন্য সম্প্রতি ১০ টন চাউল বরাদ্দ হয়েছে । এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান সহ সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করছি। যত দ্রুত সম্ভব পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে টাঙ্গাইল-৫(সদর) আসনের সংসদ সংসদ সদস্য মোঃ ছানোযার হোসেন বলেন, বন্যার কারনে ব্রিজের সংযোগ সড়ক ও করাইল সড়কের মাটি ফেলার কাজ সম্ভব হয়নি। আপাততঃ সংযোগ সড়কের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। পরে দুই পার্শ্বের সড়ক নির্মানের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
প্রতিবেদকঃ আরমান কবীর সৈকত
