স্টাফ রিপোর্টার: টাঙ্গাইলের গোপালপুর, ভূঞাপুর, কালিহাতী, সদর ও নাগরপুর উপজেলার ৩৬ হাজার মানুষ বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। সোমবার (৮ জুলাই) দুপুর পর্যন্ত জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি কোথাও অপরিবর্তিত, আবার কোথাও অবনতি হয়েছে। কয়েকটি উপজেলায় বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে বাড়িঘর, হাট-বাজার ও ফসলি জমি।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় গত রোববার সকাল ৯টা থেকে সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত যমুনা ও ঝিনাই নদীর পানি সামান্য কমলেও অন্য সব নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। যমুনা নদীর পানি পোড়াবাড়ি পয়েণ্টে ৩ সেণ্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৩৩ সেণ্টিমিটার ও ঝিনাই(নিউ ধলেশ^রী) নদীর পানি জোকারচর পয়েণ্টে ৩ সেণ্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৯৭ সেণ্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া ধলেশ্বরী নদীর পানি এলাসিন পয়েণ্টে বিপৎসীমার ২৪ সেণ্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলার ভূঞাপুর উপজেলার অর্জুণা, গাবসারা ও নিকরাইল ইউনিয়নের ১২-১৪টি গ্রামসহ পুরো চরাঞ্চল পানিতে ডুবে গেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মন্দির, ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে পড়ায় চরাঞ্চলের অনেকে নৌকায় বা স্বজনদের বাড়ি ও উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন। উপজেলার কাঁচা-পাকা রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় চরকয়েড়া, কয়েড়া, আকালু, নলুয়া বেশ কয়েকটি গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।
টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বন্যায় জেলায় এ পর্যন্ত প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে আউশ ধান, পাট, তিল ও সবজি ক্ষেত রয়েছে। পানি দীর্ঘস্থায়ী হলে কৃষকরা মানাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। পানি নেমে যাওয়ার পর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হবে বলে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাজ্জাদ হোসেন জানান, টাঙ্গাইলের প্রায় সবক’টি নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। যমুনা, ঝিনাই ও ধলেশ্বরীর পানি সামান্য কমলেও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আরও দুই দিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। ভাঙন এলাকায় জরুরি পরিষেবা হিসেবে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।
টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, ইতোমধ্যে বন্যায় জেলায় ৩৬ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। বন্যা কবলিত এলাকায় প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা সামগ্রী হিসেবে চাল, ডাল, তেল, চিনি, মসলা সহ সাড়ে ১৪ কেজি ওজনের প্যাকেট, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও পানির পাত্র বিতরণ করা হয়েছে।
তিনি জানান, বন্যা একটি প্রাকৃতিক সমস্যা। বন্যা মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়া আছে।