কাওসার আলী, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে করোনা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া অধিকাংশ রোগীই গ্রাম থেকে আসছে। এতে সহজেই অনুমেয় গ্রামাঞ্চলে করোনার সংক্রমণ বেশি হচ্ছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে করোনা ও উপসর্গ নিয়ে ৭ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। তাদের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে পাঁচ জন ও উপসর্গ নিয়ে দুই জন মারা গেছেন।
এদিকে নতুন করে জেলায় ৫৮১টি নমুনা পরীক্ষায় ২২৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৩৯ দশমিক ৭ শতাংশ। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সাজেদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে ১২৮ জন রোগী বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তাদের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৫০ জন ও উপসর্গ নিয়ে ৭৮জন রোগী রয়েছে।
হাসপাতালে করোনা রোগীর বেড রয়েছে ১১৬টি। সংকুলান না হওয়ায় অতিরিক্ত রোগীদের মেঝেতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে করোনা রোগীর চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে বেডের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, করোনা ও উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের নাম-ঠিকানা পর্যবেক্ষণ করে তারা জানতে পেরেছেন- তাদের অধিকাংশই গ্রাম থেকে জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন।
টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মো. সাহাবুদ্দিন খান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২২৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
তাদের মধ্যে টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় ৮৫, গোপালপুরে ২৬ জন, সখীপুরে ২৪ জন, ঘাটাইলে ১৭ জন, ধনবাড়ীতে ১৬ জন, কালিহাতীতে ১৫ জন, বাসাইলে ১৩ জন, দেলদুয়ারে ১২ জন, মধুপুরে নয় জন, মির্জাপুরে চার জন, নাগরপুর ও ভূঞাপুরে তিন জন করে রয়েছেন।
এ পর্যন্ত জেলায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল আট হাজার ৬৩১ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মোট সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরেছেন চার হাজার ৮৪১ জন। এ পর্যন্ত জেনারেল হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন ১৩০ জন।
তিনি জানান, টাঙ্গাইলে করোনা রোগীর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। বর্তমানে গ্রামাঞ্চলের মানুষই বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। তারা সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে, স্বাস্থ্য বিধি না মেনে, মাস্ক না পড়ে অবাধে চলাচল করছে।
ফলে গ্রামের মানুষ বেশি সংখ্যায় করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে। গ্রাম এলাকার মানুষ এখনই স্বাস্থ্য সচেতন না হলে আগামি দিনে করোনা পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
তিনি টাঙ্গাইল জেলার সবাইকে সরকারের বিধিনিষেধ মেনে স্বাস্থ্য সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।
একই সাথে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে স্ব স্ব স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি এবং মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনদের বিশেষ ভূমিকা রাখারও আহ্বান জানান।