ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক ৬ লেনের উন্নতি করনের কাজ ধীর গতিতে চলায় ভোগান্তির শিকার হতে পারে এবার ঈদে ঘরমুখি যাত্রী সাধারন। বিশেষ করে এই মহাসড়কের চন্দ্রা হতে এলেঙ্গা পর্যন্ত সড়কে নির্মানাধীন ১১টি আন্ডার পাসের মধ্যে মাত্র ৩টি খুলে দেওয়া হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে ঘারিন্দা আন্ডার পাস, দেওহাটা আন্ডার পাস ও কালিয়াকৈর অংশে কালিয়াকৈর আন্ডার পাস। বাকি ৮টি আন্ডার পাসের নির্মান কাজ চলায়, সড়কের এই অংশের ঈদে যানজট তৈরী হবার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশী। সড়কের এই অংশ গুলোতে রাস্তা ভাঙ্গা চোরা এবং খানা খন্দে ভরা থাকায় যান চলাচল করছে অত্যন্ত ধীর গতিতে।এ ছাড়া ধীর গতির যান চলাচলের জন্য তৈরী হচ্ছে আলাদা ২টি লেন। এই ধীর গতির যান চলাচলের সড়ক তৈরী জন্য জমি অধিগ্রহনে জটিলতা ও এ সব অধিগ্রহনকৃত জমিতে পিডিবির ইলেট্রিক পিলার সরানোর কাজ ধীর গতির কারনে সড়ক উন্নয়নের কাজ চলছে ধীর গতিতে । ফলে এ বছরের ডিসেম্বর মধ্যে এই মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নতি করনের কাজ শেষ হবার চুক্তি থাকলেও তা সম্ভব হবে না বলেই ধারনা করছে সড়ক নির্মান সংশিষ্ট ব্যক্তিরা। ফলে এবার ঈদে ঘরমুখি মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হতে পাবে বলে আশংঙ্কা করছে এই সড়ক ব্যবহারকারী যাত্রীগন।
প্রসঙ্গে সোহাগ পরিবহনের চালকের সহকারী মোঃ আমির বলেন, এই ঈদে যানজট তৈরী হবার সম্ভবনা আছে। কারন এখন পর্যন্ত ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক নির্মান কাজ সম্পূর্ন্ন শেষ হয়নি।
এ সড়কে প্রতিদিন ব্যবসার কারনে চলাচলকারী প্রাইভেট কার চালক সিরাজগঞ্জের উজ্জল কুমার সরকার বলেন, আমি প্রতিদিন এই সড়কে যাতায়াত করি। বিশেষ করে এখনই সন্ধার পরে যান জট তৈরী হচ্ছে। ঈদে যদি বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, তাহলে যাত্রীদের এবার ঈদে ভোগান্তি হবে এটা এখনই বলা যায়।
ঢাকা-রংপুরের মধ্যে চলাচলকারী এসি বাস আগমনীর পরিবহনের যাত্রী, ঢাকায় বসবাসকারী ফাল্গুনী আমমেদ বলেন, রংপুর থেকে ঢাকায় যাচ্ছি,বেশ ভালো ভাবেই যাচ্ছি কিন্তু রাস্তার কাজের যে অগ্রগতি তাতে ঈদে রংপুরে পরিবার নিয়ে ফেরার সময় কি অবস্থা হবে তাই ভাবছি। গত বছর বেশ কষ্ট হয়েছিল, এবারও সে ধরনের কষ্ট স্বীকার করতে হবে বলে মনে হচ্ছে। আশা করি, সরকার যত দ্রুত সম্ভব এই রাস্তার নির্মান কাজ শেষ করবে। এই রাস্তা ব্যবহার করে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে লোক জন যাতায়াত করে। তাই বিষয়টির গুরুত্ব সহকারে নিয়ে দ্রুত কাজ করা উচিৎ।
এই সড়ক নির্মান প্রতিষ্ঠান মীর আখতার লিমিটেডের বাঐখোলা, করটিয়া ও তারটিয়া আন্ডার পাস নির্মানের দায়িত্বে থাকা প্রধান প্রকৌশলী এহ্সান আহমেদ রাজু জানান, ঈদের সময় এই তিনটি আন্ডার পাসের দুটি লেন খুলে দেওয়া হবে ঢাকা থেকে ঘরমুখো যাত্রীবাহী যান বাহনের চলাচলের জন্য আর একটি লেন খোলা রাখা হবে ঢাকা ফেরত যান বাহনের জন্য, ফলে আশা করা যায়, কোন ধরনের যানজট তৈরী হবে না। তবে যেহেতু আন্ডার পাস গুলো পুরোপুরি তৈরী হয়নি তাই যান চলাচলে কিছুটা অসুবিধা হতে পারে।
টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, এবার ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের নিরাপদে ফিরতে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৬০০ পুলিশ ও আনসার মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে মোতায়েত থাকবে। এ ছাড়া বেশ কয়েকটি র্যাব ও পুলিশের ভ্রাম্যমান টহল দল থাকবে । এরা যাত্রীদের নিরাপত্তা দেওয়ার সাথে সাথে যানজট নিরসনেও কাজ করবে। আশা করি এবার ঈদে ঢাকা- টাঙ্গাইল মহাসড়কের টাঙ্গাইল অংশে কোন ধরনের যানজট তৈরী হবে না।
টাঙ্গাইল সওজ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আমিমুল এহ্সান এ ব্যাপারে বলেন, ধীর গতির যান চলাচলের সড়ক তৈরীর ভূমি অধিগ্রহনে জটিলতা ও অধিগ্রহনকৃত জমিতে পিডিবি’র ইলেট্রটিক পিলার সরানোর কাজ দেরি হওয়ায় আমাদের কাজের গতিও বাড়াতে পারছি না। ইতিমধ্যে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে নিমানাধীন ১১টি আন্ডার পাসের মধ্যে ঘারিন্দা, দেওহাটা ও কালিয়াকৈর আন্ডার পাস যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। বাকি গুলোর খুব দ্রুত খুলে দেওয়া হবে। আশা করি, এই ঈদে সড়কের কারনে যানজট তৈরী হবে না।
প্রতিবেদকঃ মোঃ আরমান কবীর সৈকত